জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার পাটহাটি মোড়ে সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিমকে হত্যার ঘটনায় ছয়জনকে আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (১৬ জুন) সকালে বকশীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল রানা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে এ ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি।
এদিকে গোলাম রব্বানির ওপর হামলার ৩২ সেকেন্ডের সিসিটিভি ফুটেজের দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
৩২ সেকেন্ডের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, বুধবার রাত ১০টা ১৭ মিনিটের দিকে সাংবাদিক গোলাম রব্বানি মোটরসাইকেলে পাটহাটি মোড় পার হচ্ছিলেন। হঠাৎ একজন দৌড়ে চলন্ত মোটরসাইকেলটির পেছন দিক থেকে টেনে ধরে এবং ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। গোলাম রব্বানী পড়ে যাওয়ার পরপরই একদল সন্ত্রাসী তাকে টেনেহিঁচড়ে কিল-ঘুষি মারতে থাকে। পাঁচ থেকে ছয়জন মারধরে অংশ নিলেও আশপাশে আরও অনেক হামলাকারীকে ফুটেজে দেখা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হামলার ঠিক আগ মুহূর্তে সাত থেকে আটটি মোটরসাইকেল উপজেলার পাটহাটি মোড়ে বিভিন্ন স্থানে আসে। বুধবার রাত ১০টা ১৭ মিনিটে সাংবাদিক গোলাম রব্বানির মোটরসাইকেলটি অতিক্রম করার সময় আগেই অবস্থান নেওয়া হামলাকারীরা তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। হামলাকারীদের মধ্য থেকে একজন বলছিলেন, ওই তরা অন্ধকারে নিয়ে মার। এরপর তাকে সিসিটিভির আওতার বাইরে নিয়ে তাকে উপর্যুপরি মারধর করে সন্ত্রাসীরা। একপর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে পড়লে সন্ত্রাসীরা তাকে ফেলে পালিয়ে যায়।
বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে বাড়ি ফেরার সময় পাটহাটি মোড়ে ১০ থেকে ১২ জন দুর্বৃত্ত সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিমের ওপর হামলা করে। হামলায় নাদিম গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয় সাংবাদিক এবং পথচারীরা তাকে প্রথমে বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। সেখান থেকে রাতেই তাকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় বৃহস্পতিবার সকালে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুরে তার মৃত্যু হয়।
নিহত নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, সংবাদ প্রকাশকে কেন্দ্র করে বকশীগঞ্জের সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম নাদিমের ওপর অসন্তুষ্ট ছিল। আগেও তিনি নানাভাবে হেনস্তা করার চেষ্টা করেছেন। ওই ইউপি চেয়ারম্যানের লোকজনই হামলা করে নাদিমকে হত্যা করেছে। আমি এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোহেল রানা বলেন, ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের শনাক্ত করা হয়েছে। সবাইকে ধরার চেষ্টা চলছে। ইতিমধ্যে ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে মাঠে আছে পুলিশ।